শনিবার, ২০ মার্চ, ২০১০

পল রোবসনের কণ্ঠে “Old Man River” : সংগীতের ক্রমবিবর্তন

পল রোবসন 
জগদ্বিখ্যাত মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিবাদী কণ্ঠশিল্পী পল রোবসনের নাম, প্রতিটি সংগ্রামী মানুষেরই জানা। তাঁর গাওয়া একটি বিখ্যাত গান “Old Man River” গোটা পৃথিবীর গণসঙ্গীতের ধারাকে প্রভাবিত করেছে। বাংলা ভাষায় ভূপেন হাজারিকা সহ একাধিক শিল্পীর কন্ঠে এই গানটির অনুপ্রেরণায় রচিত “বিস্তীর্ণ দুপারে” হয়তো অনেকেই শুনে থাকবেন। আমি এখানে মূল “Old Man River” গানটি পল রোবসনের নিজের কণ্ঠে কিভাবে পরিবেশন করতেন তা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। এই গানটি রোবসন প্রায় সমস্ত সঙ্গীতজীবন জুড়ে একাধিক বার গেয়েছেন। এখানে আমি প্রথম যে ট্র্যাকটি দিয়েছি সেটি ১৯২৮ সালে গাওয়া। এর পরেরটি ১৯৩৬ সালে গাওয়া। তৃতীয়টির রেকর্ডিং-এর সময় সঠিক ভাবে জানা না থাকলেও, যে এটি ১৯৩৬ ও ১৯৫৮ সালের মাঝেই করা, এবিষয়ে আমি নিঃসন্দেহ। কারণ সর্বশেষ ট্র্যাক যেটি ১৯৫৮ সালে লাইভ রেকর্ডেড, তাতে কন্ঠে বয়সের ছাপ এর থেকে অনেক বেশী, আবার ১৯৩৬ সালের রেকর্ডিং-এ কণ্ঠ এর থেকে অপেক্ষাকৃত নবীন। যাই হোক, গানগুলি শোনার সময় যে দিকটায় খেয়াল রাখবেন তাহলো, সময়ের সাথে সাথে নিগ্রো স্পিরিচুয়ালের আবরন ভেঙে গানের উপস্থাপনায় প্রতিবাদের সুর কিভাবে সোচ্চার হচ্ছে রোবসনের কণ্ঠে। এবার শুনতে থাকুন।

Paul Robeson – Old Man River (1928)

Paul Robeson – Old Man River (1936)

Paul Robeson – Old Man River (undated)

Paul Robeson – Old Man River (Carnegie Hall 1958)

পাদটীকাঃ পল রোবসন তাঁর সঙ্গীতজীবন শুরু করেন, নিগ্রো স্পিরিচুয়াল গান দিয়ে। তখন মার্কিন যুক্তরাজ্যে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিবাদ করতে কৃষ্ণাঙ্গরা বড় একটা সাহস পেতেন না। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখযোগ্য যে, পল রোবসন কলেজ দলে খেলতে গিয়ে, নিজের দলেরই শ্বেতাঙ্গ সদস্যদের হাতে নির্যাতিত হয়েছিলেন। তারা মেরে তাঁর নাক ভেঙে দেয় ও কাঁধের হাড় ডিসলোকেট করে দেয়। এরকম অবস্থায় পল তাঁর নিগ্রো স্পিরিচুয়াল গানের মধ্যে দিয়েই কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের দুঃখ-যন্ত্রণার কথা তুলে ধরতে থাকেন। ক্রমে এর মধ্যে সূক্ষ্মভাবে প্রতিবাদের সুর ফুটিয়ে তুলতে থাকেন। কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার অর্জনের সংগ্রাম ক্রমশ দানা বাধতে থাকলে পলের কণ্ঠে প্রতিবাদের সুরও ক্রমশ সোচ্চার হতে থাকে। এখানে তৃতীয় গানটি সম্ভবত নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সর্বোচ্চ সময়ে গাওয়া। লক্ষ করুন এর স্বরক্ষেপণ। লক্ষ করুন ক্রোধে ও যন্ত্রণার প্রকাশ।

1 টি মন্তব্য:

সুশান্ত কর বলেছেন...

শুনাবার চেষ্টা করলাম কয়েকবার। কিন্তু এখানে এট স্লো যে শোনা হলো না। তবে কাজটি ভালো করেছেন। একটা ইতিহাস পাওয়া গেল।