শুক্রবার, ১৯ মার্চ, ২০১০

বহুবিবাহ নিবারণ প্রসঙ্গে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

১৮৬৬ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি বিদ্যাসাগর বহুবিবাহ রহিত করার জন্য দ্বিতীয়বার গভর্নমেন্টের কাছে আবেদন পত্র দাখিল করেন। ১৮৬৬ সালেই ৫ই এপ্রিল, ১২ই জুন, ৮ই আগস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট হিন্দুদের বহুবিবাহ নিরোধক আইন প্রণয়ন সম্পর্কে ভারত সরকারকে (ব্রিটিশ) চিঠি লেখে। বিষয়টি ভারত সরকার, ১৬ই আগস্ট তারিখে, সেক্রেটারি-অফ-স্টেটকে লিখিত ভাবে জানায়। সেক্রেটারি-অফ-স্টেট, ঐ বছরেরই ৩১শে অক্টোবর, ভারতের গভর্নর জেনারালকে লিখেছেন :
I concur with your Excellency in the opinion that there is not sufficient evidence “that a large majority of even the more enlightened people of the Province” of Bengal “will be found to be heartily against Polygamy, apart from the special abuses practiced by the Kulin Brahmins.” I am inclined to think therefore that at present no measure of a legislative character should be taken. Any legislation having reference to the marriages of natives should, in my opinion, emanate from Excellency in Council, and no proposal for legislation on the subject, affecting so deeply the feelings both of Hindoos and Mussulmans, should be entertained without the sanction of Her Majesty’s Government previously given.
অর্থাৎ, বাংলার বেশিরভাগ মানুষ, এমনকি তথাকথিত শিক্ষিতেরাও যে বহুবিবাহের বিরোধী তার কোন প্রমান পাওয়া যাচ্ছে না। সুতরাং এবিষয়ে কোন আইন প্রণয়নের পথে না যাওয়াই বাঞ্ছিত। কারন সেক্ষেত্রে হিন্দু ও মুসলমান, উভয় সম্প্রদায়েরই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে।
১৮৬৬ সালেরই ২২শে আগস্টের সরকারি চিঠি থেকে জানা যাচ্ছে যে সি. পি. হবহাউস, রাজা সত্যশরণ ঘোষাল, দিগম্বর মিত্র, রমানাথ ঠাকুর, বিদ্যাসাগর এবং এইচ. টি. প্রিন্সেপ কে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, হিন্দুদের বহুবিবাহ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে আইন প্রনয়ন বিষয়ে মতামত দেবার জন্য :
“appointed to form a Committee to report on the best means of giving practical effects to the wishes of the Government of India on the subject of restricting unlimited polygamy among Hindus in Bengal by legal enactment.”
১৮৬৬ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বরের একখানা সরকারি চিঠি থেকে জানা যাচ্ছে যে জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ও ওই কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। যাই হোক অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচ্য বিষয়ে বিদ্যাসাগর সম্পূর্ণ একমত হতে পারলেন না। ১৮৬৭ সালের ২২শে জানুয়ারি বিদ্যাসাগর লিখছেন :
“I do not concur in the conclusion come to by the other gentlemen of the Committee. I am of opinion that a Declaratory Law might be passed without interfering with that liberty which Hindoos now by law possess in the matter of marriage.”
তিনি মনে করেন, বহুবিবাহ প্রতিরোধক আইন প্রনয়ন করলে, তার দ্বারা হিন্দুদের বিবাহ সংক্রান্ত স্বাধীনতার কোন হানি ঘটবে না।
১৮৭১ সালে বিদ্যাসাগর লিখেছেন : “লোকান্তরবাসী সুপ্রসিদ্ধ বাবু রমাপ্রসাদ রায় মহাশয়, এই সময়ে, এই কুৎসিত প্রথার নিবারণ বিষয়ে যেরূপ যত্নবান হইয়াছিলেন, এবং নিরতিশয় উৎসাহসহকারে অশেষপ্রকারে যেরূপ পরিশ্রম করিয়াছিলেন, তাহাতে তাঁহাকে সহস্র সাধুবাদ প্রদান করিতে হয়। ব্যবস্থাপক সমাজ বহুবিবাহনিবারণী ব্যবস্থা বিধিবিদ্ধ করিবেন, সে বিষয়ে সম্পূর্ণ আশ্বাস জন্মিয়াছিল। কিন্তু এই হতভাগ্য দেশের দুর্ভাগ্যক্রমে, সেই সময়ে রাজবিদ্রোহ উপস্থিত হইল। রাজপুরুষেরা, বিদ্রোহনিবারণবিষয়ে সম্পূর্ণ ব্যাপৃত হইলেন; বহুবিবাহনিবারণবিষয়ে আর তাঁহাদের মনোযোগ দিবার অবকাশ রহিল না।” এখানে রাজবিদ্রোহ বলতে সিপাহী বিদ্রোহের কথা বলা হয়েছে।
বহুবিবাহ বিষয়ে বিদ্যাসাগরের প্রথম বই প্রকাশিত হয়েছে ১৮৭১ সালের ১০ই আগস্ট। বইয়ের নাম “বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক বিচার”। বইটি সম্পর্কে ১২৭৮ বঙ্গাব্দে ‘রহস্য-সন্দর্ভ’ -এর সপ্তম পর্ব, ৬৭খণ্ডে লেখা হয়েছে, “শ্রীযুত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের রচনা চাতুর্য্যাদি বিষয়ে আমাদিগের কিছু বলার প্রয়োজন করে না, যেহেতু সহৃদয় পাঠক মাত্রেই অবগত আছেন যে, পণ্ডিতবর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় বাঙ্গালা গদ্যের আদি উন্নতিকারক ও সর্ব্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ লেখক। বর্ত্তমান গ্রন্থে প্রশংসিত মহাশয় কুলীনগণের বহুবিবাহরূপ কুপ্রথার দোষাদোষ ব্যাখ্যা করিয়া তদবৈধতা ও তন্নিবারণ কর্ত্তব্যতা দর্শাইয়াছেন। এতদগ্রন্থ সম্বন্ধে আমরা এই মাত্র বলিতে ইচ্ছা করি যে, পাঠকগণ যেন ইহাকে কেবল বহুবিবাহ নিবারণ করণার্থে প্রদর্শিত কারণ শমষ্টী মাত্র বিবেচনা না করেন। বিদ্যাসাগর মহোদয় “বিধবা বিবাহ হওয়া উচিত কি না?” ইত্যভিধেয় যে দুই খণ্ড গ্রন্থ পূর্ব্বে প্রকাশ করিয়াছেন তদ্দ্বারা বাঙ্গালা গদ্যের বিশেষ উন্নতি সিদ্ধ হইয়াছে। আমাদিগের ভাষায় কাব্য অলঙ্কার ইতিহাস দর্শন প্রভৃতি বিষয়ক রচনার অভাব দেখা যায় না, কিন্তু যথার্থ বৈচারিক রচনার লেশমাত্রও ছিল না। “বিধবা বিবাহ হওয়া উচিত কি না?” ও “বহুবিবাহ নিবারন হওয়া উচিত কি না?” ইত্যাক্ষ গ্রন্থখানিতে বাঙ্গালার সে অপযশ দূরীকৃত হইয়াছে। এই সকল গ্রন্থের রচনাপ্রণালী বিশেষরূপে আলোচনা ও অভ্যাস করিলে এক ব্যক্তি ন্যায়দর্শন পাঠ ব্যতিরেকেও উত্তম বৈচারিক রচনায় পারগ হয়েন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের নব নব রচনা দর্শনে কেবল আমরা অভিলাষী নহি বোধ করি বঙ্গলক্ষী তাঁহার নূতন গ্রন্থ নিত্য নিত্য দেখিতে ইচ্ছা করেন।”
“বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব” থেকে কিছু অংশ উদ্ধৃতি দেওয়া যাক।
“যে সকল হতভাগা কন্যা স্বকৃতভঙ্গ অথবা দুপুরুষিয়া পাত্রে অর্পিত হয়েন, তাঁহারা যাবজ্জীবন পিত্রালয়ে বাস করেন। বিবাহকর্তা মহাপুরুষেরা, কিঞ্চিৎ দক্ষিণা পাইয়া, কন্যাকর্ত্তার কুলরক্ষা অথবা বংশের গৌরববৃদ্ধি করেন, এইমাত্র। সিদ্ধান্ত করা আছে, বিবাহকর্ত্তাকে বিবাহিতা স্ত্রীর তত্ত্বাবধানের, অথবা ভরণপোষণের, ভারবহন করিতে হইবেক না। সুতরাং কুলীন মহিলারা, নামমাত্রে বিবাহিত হইয়া, বিধবা কন্যার ন্যায়, যাবজ্জীবন পিত্রালয়ে কালযাপন করেন। স্বামিসহবাসসৌভাগ্য বিধাতা তাঁহাদের অদৃষ্টে লিখেন নাই; এবং তাঁহারাও সে প্রত্যাশা করেন না। কন্যাপক্ষীয়েরা সবিশেষ চেষ্টা পাইলে, কুলীন জামাতা শ্বশুরালয়ে আসিয়া দুই চারিদিন অবস্থিতি করেন; কিন্তু সেবা ও বিদায়ের ত্রুটি হইলে, এ জন্মে আর শ্বশুরালয়ে পদার্পণ করেন না।
কোনও কারণে কুলিনমহিলার গর্ভসঞ্চার হইলে, তাহার পরিপাকার্থে, কন্যাপক্ষীয়দিগকে ত্রিবিধ উপায় অবলম্বন করিতে হয়। প্রথম, সবিশেষ চেষ্টা ও যত্ন করিয়া, জামাতার আনয়ন। তিনি আসিয়া, দুই এক দিন শ্বশুরালয়ে অবস্থিতি করিয়া প্রস্থান করেন। ঐ গর্ভ তৎসহযোগসম্ভূত বলিয়া পরিগণিত হয়। দ্বিতীয়, জামাতার আনয়নে কৃতকার্য্য হইতে না পারিলে, ব্যভিচারসহচরী ভ্রূণহত্যাদেবীর আরাধনা। এ অবস্থায়, এতদ্ব্যতিরিক্ত নিস্তারের আর পথ নাই। তৃতীয় উপায় অতি সহজ, অতি নির্দোষ ও সাতিশয় কৌতুকজনক। তাহাতে অর্থব্যয়ও নাই, এবং ভ্রূণহত্যাদেবীর উপাসনাও করিতে হয় না। কন্যার জননী, অথবা বাটীর অপর গৃহিণী, একটি ছেলে কোলে করিয়া, পাড়ায় বেড়াইতে যান, এবং একে একে প্রতিবেশীদিগের বাটীতে গিয়া, দেখ মা, দেখ বোন, অথবা দেখ্‌ বাছা, এইরূপ সম্ভাষণ করিয়া, কথাপ্রসঙ্গে বলিতে আরম্ভ করেন, অনেক দিনের পর কাল রাত্রিতে জামাই আসিয়াছিলেন; হঠাৎ আসিলেন, রাত্রিকাল, কোথা কি পাব; ভাল করিয়া খাওয়াতে পারি নাই; অনেক বলিলাম, এক বেলা থাকিয়া, খাওয়া দাওয়া করিয়া যাও; তিনি কিছুতেই রহিলেন না; বলিলেন, আজ কোনও মতে থাকিতে পারিব না; সন্ধ্যার পরেই অমুক গ্রামের মজুমদারের বাটীতে একটা বিবাহ করিতে হইবেক; পরে, অমুক দিন, অমুক হালদারের বাটীতেও বিবাহের কথা আছে, সেখানেও যাইতে হইবেক। যদি সুবিধা হয়, আসিবার সময় এই দিক দিয়া যাইব। এই বলিয়া ভোর ভোর চলিয়া গেলেন। স্বর্ণকে বলিয়াছিলাম, ত্রিপুরা ও কামিনীকে ডাকিয়া আন্‌, তারা জামায়ের সঙ্গে খানিক আমোদ আহ্লাদ করিবে। একলা যেতে পারিব না বলিয়া, ছুঁড়ী কোনও মতেই এল না। এই বলিয়া, সেই দুই কন্যার দিকে চাহিয়া, বলিলেন, এবার জামাই এলে, মা তোরা যাস্‌ ইত্যাদি। এইরূপে পাড়ার বাড়ী বাড়ী বেড়াইয়া জামাতার আগমনবার্ত্তা কীর্ত্তন করে। পরে স্বর্ণমঞ্জরীর গর্ভসঞ্চার প্রচার হইলে, ঐ গর্ভ জামাতৃকৃত বলিয়া পরিপাক পায়।”
“এ দেশের ভঙ্গকুলীনদের মত পাষণ্ড ও পাতকী ভূমণ্ডলে নাই। তাঁহারা দয়া, ধর্ম্ম, চক্ষুলজ্জা ও লোকলজ্জায় একেবারে বর্জিত। তাঁহাদের চরিত্র অতি বিচিত্র। চরিত্রবিষয়ে তাঁহাদের উপমা দিবার স্থল নাই। তাঁহারাই তাঁহাদের একমাত্র উপমাস্থল। কোনও অতিপ্রধান ভঙ্গকুলীনকে কেহ জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন, ঠাকুরদাদা মহাশয়! আপনি অনেক বিবাহ করিয়াছেন, সকল স্থানে যাওয়া হয় কি। তিনি অম্লানমুখে উত্তর করিলেন, যেখানে ভিজিট পাই, সেখানে যাই। গত দুর্ভিক্ষের সময়, এক জন ভঙ্গকুলীন অনেকগুলি বিবাহ করেন। তিনি লোকের নিকট আস্ফালন করিয়াছিলেন, এই দুর্ভিক্ষে কত লোক অন্নাভাবে মারা মারা পড়িয়াছে, কিন্তু আমি কিছুই টের পাই নাই; বিবাহ করিয়া সচ্ছন্দে দিনপাত করিয়াছি। গ্রামে বারোয়ারিপূজার উদ্যোগ হইতেছে। পূজার উদ্যোগীরা, এই বিষয়ে চাঁদা দিবার জন্য, কোনও ভঙ্গকুলীনকে পীড়াপীড়ি করাতে, তিনি, চাঁদার টাকা সংগ্রহের জন্য, একটি বিবাহ করিলেন। বিবাহিতা স্ত্রী স্বামীর সমস্ত পরিবারের ভরণপোষণের উপযুক্ত অর্থ লইয়া গেলে, কোন ভঙ্গকুলীন, দয়া করিয়া, তাহাকে আপন আবাসে অবস্থিতি করিতে অনুমতি প্রদান করেন; কিন্তু সেই অর্থ নিঃশেষ হইলেই, তাহাকে বাটী হইতে বহিষ্কৃত করিয়া দেন।”
“বহুবিবাহপ্রথা প্রচলিত থাকাতে, অশেষপ্রকারে হিন্দুসমাজের অনিষ্ট ঘটিতেছে। সহস্র সহস্র বিবাহিতা নারী, যার পর নাই, যন্ত্রনাভোগ করিতেছেন। ব্যভিচারদোষের ও ভ্রূণহত্যাপাপের স্রোত প্রবলবেগে প্রবাহিত হইতেছে। দেশের লোকের যত্নে ও চেষ্টায় ইহার প্রতিকার প্রতিকার হওয়া কোনও মতে সম্ভাবিত নহে। সম্ভাবনা থাকিলে, তদর্থে রাজদ্বারে আবেদন করিবার কিছুমাত্র প্রয়োজন থাকিত না। … আমাদের ক্ষমতা গবর্ণমেন্টের হস্তে দেওয়া উচিত নয়, এ কথা বলা বালকতা প্রদর্শন মাত্র। আমাদের ক্ষমতা কোথায়। ক্ষমতা থাকিলে ঈদৃশ বিষয়ে গবর্ণমেন্টের নিকটে যাওয়া কদাচ উচিত ও আবশ্যক হইত না; আমরা নিজেই সমাজের সংশোধনকার্য্য সম্পন্ন করিতে পারিতাম। ইচ্ছা নাই, চেষ্টা নাই, ক্ষমতা নাই, সুতরাং সমাজের দোষসংশোধন করিতে পারিবেন না; কিন্তু তদর্থে রাজদ্বারে আবেদন করিলে অপমানবোধ বা সর্ব্বনাশজ্ঞান করিবেন, এরূপ লোকের সংখ্যা, বোধ করি, অধিক নহে; এবং অধিক না হইলেই, দেশের ও সমাজের মঙ্গল।”
চণ্ডীচরন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখায় পাই, “বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বহুবিবাহ বিষয়ক গ্রন্থে তিনি হুগলী জেলার অন্তর্গত বহুবিবাহকারী কুলীনগণের যে তালিকা দিয়াছেন, তদৃষ্টে দেখা যায় যে, মোট ৮৬ খানি গ্রামের ১৯৭ জন কুলীন সন্তান সে সময়ে বহুবিবাহ করিয়াছিলেন, ইহারা সর্ব্বসমেত ১২৮৮ জন বঙ্গ রমণীর পাণিগ্রহণ করিয়া ইহাদের অধিকাংশকেই চিরদুঃখানলে দগ্ধ করিয়াছেন! হুগলী জেলার অন্তর্গত বহুসংখ্যক সম্ভ্রান্ত ভদ্রমণ্ডলীর বাসস্থান সুপ্রসিদ্ধ জনাই গ্রামের ৬৪ জন কুলীন মহাশয় ১৬২টী বিবাহ করিয়াছিলেন, ইহাদের মধ্যে যিনি সংখ্যায় অধিক বিবাহ করিয়াছিলেন, সেরূপ দুই মহাত্মার প্রত্যেকের গৃহিণীর সংখ্যা ১০। এতদিন সমগ্র হুগলী জেলায় বহুবিবাহে বিপন্না স্ত্রীর সংখ্যার তুলনায় দেখা যায় যে, প্রত্যেক মহাশয় গড়ে ১১টীর অধিক বিবাহ করিয়াছিলেন। আর যিনি সর্ব্বাপেক্ষা অধিক পরিমাণ কৌলীন্য রক্ষা করিয়া কৃতার্থ হইয়াছিলেন, তাঁহার বয়স যখন ৫৫ বৎসর তখন তিনি কুড়ি গণ্ডা বিবাহ করিয়া অক্ষয়কীর্ত্তি সঞ্চয় করিয়াছিলেন।”
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, বহুবিবাহ বিষয়ে বিদ্যাসাগরের দ্বিতীয় পুস্তক “বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার। দ্বিতীয় পুস্তক।” প্রকাশিত হয় ১৮৭৩ সালের ১লা এপ্রিল।

তথ্যসূত্রঃ  করুণাসাগর বিদ্যাসাগর; ইন্দ্রমিত্র : আনন্দ পাবলিশার্স, কলকাতা, ১৯৬৬, ISBN 81-7215-040-7

কোন মন্তব্য নেই: